শান্তি রক্ষায় পরিপূর্ণভাবে ইসলামে ফিরে আসুন, নামায প্রতিষ্ঠা করুন
মোঃ আলগীর হোসেন
ইসলামের মূল স্তম্ভগুলোর
মধ্যে নামাজ অন্যতম, যা প্রতিটি ঈমানদারের জন্য অবশ্যই পালনীয় । নামাজই মানুষকে
দুনিয়ার সব পাপ-পংকিলতা থেকে ধুয়ে মুছে পাক-সাফ করে দিয়ে দুনিয়ার সব অন্যায়-অনাচার
থেকে হেফাজত করার কথা ছিল । কিন্তু আজ দেশের চিত্র উল্টা, অপরাধ আর অপরাধীদের অবাধ বিচরণ । তার মানে আমরা নামাজ আদায় করছি না, করলেও সঠিক
ভাবে হচ্ছে না । সুতরাং পরিবার থেকে সমাজ আর সমাজ থেকে দেশ প্রতিটি জাইগায়,
প্রতিটি ক্ষেত্রে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য পরিপূর্ণ ভাবে আমাদের ইসলামে ফিরে আসতে
হবে, প্রতিষ্ঠা করতে হবে নামাজ ।
শয়তানের ধোঁকায় যখন মানুষ অন্যায় ও
অশোভনীয় কাজে লিপ্ত হতে চাইবে তখন সালাতই তার বিবেককে জাগ্রত করবে, তাকে বাঁধা
দেবে । সালাত আদায় করে কেউ পবিত্র অফিসের, পবিত্র চেয়ারে বসে, পবিত্র টেবিলের
উপরে, পবিত্র কলমের, পবিত্র কালি দিয়ে ক্ষণিকের মোহ সামলাতে না পেরে সবকিছুকে
অপবিত্র করে সম্পদের পাহাড় গড়তে পারে না । আজ সমাজে যে মাদকাসক্তি, ঘুষ, দুর্নীতি,
চুরি, তথ্য গোপন, সন্ত্রাস,
অপসংস্কৃতি, উগ্রতা, সুদ ও যৌনতার অবাধ বিচরণ তাতে নামায প্রতিষ্ঠার
কোন বিকল্প নেই । পবিত্র কোরআনে আল্লাহ্ নিজেই ঘোষণা করেছেন-
اتْلُ
مَا أُوحِيَ إِلَيْكَ مِنَ الْكِتَابِ وَأَقِمِ الصَّلَاةَ إِنَّ الصَّلَاةَ
تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاء وَالْمُنكَرِ وَلَذِكْرُ اللَّهِ أَكْبَرُ وَاللَّهُ
يَعْلَمُ مَا تَصْنَعُونَ
“আপনি আপনার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব পাঠ
করুন এবং নামায কায়েম করুন । “নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও গর্হিত কার্য থেকে বিরত
রাখে” । আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন তোমরা যা কর ” (সুরা আল-আনকাবূত: ৪৫) । সুমহান ওই প্রভুর
সামনে যখন আপনি দণ্ডায়মান হবেন আপনাকে লজ্জিত ও অনুতপ্ত হতেই হবে । কেননা তিনিই তো
অন্তর্যামী, যিনি প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য জানেন শুধু তাই না, জানেন অন্তরের সংকল্পও ।
একমাত্র সালাতই পারে ইখলাস, আত্মশুদ্ধি
ও আত্মবিলোপের মহৎ গুণাবলির পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটিয়ে, সকল প্রকার অশ্লীলতা, পাপাচার, প্রবৃত্তিপূজা, ক্ষণস্থায়ী ভোগ বিলাসের অন্ধ
মোহ থেকে মুক্ত করে পূতপবিত্র ও উন্নত এক আদর্শ জীবনের অধিকারী বানিয়ে মানুষকে
পৌঁছে দিতে আল্লাহর সান্নিধ্যের স্বর্ণশিখরে । হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী কারীম
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে অভিযোগ করল, অমুক ব্যক্তি রাতে সালাত আদায়
করে আর দিনের বেলায় চুরি করে । নবীজী বললেন-তুমি যা বলছ (অর্থাৎ তার নামায) তা
শীঘ্রই তাকে (এ অন্যায় থেকে) বিরত রাখবে (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৯৭৭৮; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ২৫৬০) । পবিত্র কোরআনের আয়াত
আর রাসূল(সাঃ) এর হাদিস অনুসারে সকল অসঙ্গতি দূর করার জন্য নামাজের প্রতিষ্ঠা করা
একান্ত কাম্য ।
ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র
এই পৃথিবীর প্রতিটি কাজের হিসাব বিচার দিবসে আপনাকে আমাকে দিতে হবে । আর সেখানে প্রথমেই দিতে হবে
সালাতের হিসাব(মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৬৯৪৯; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৮৬৬) । পবিত্র কোরআনের মাধ্যমে ঘোষণা এসেছে, “সেদিন জাহান্নামীদের
জাহান্নামে আসার কারন জিজ্ঞাসা করা হলে তারা প্রথমেই বলবে আমারা সালাত আদায়কারীদের
অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না”(সূরা আল-মুদ্দাসসিরঃ ৪২-৪৩) । সুতরাং নামায ছেড়ে দিয়ে জান্নাতি হওয়ার সপ্ন দেখা যেমন মূর্খের স্বর্গে বসবাস, তেমনি বে-নামাজী জাহান্নামে যাবে এটাও সুনিশ্চিত ।
সুতরাং বিবেককে বিসর্জন
না দিয়ে ইসলামে ফিরে এসে, ইসলামের আলোয় আলোকিত হয়ে, ইসলামী বিধান অনুযায়ী পরিচালনা
করুন আপনার জীবন । নিজে নামায পড়ুন, অন্যকেও পড়তে উৎসাহিত করুন । কেননা নামাযই মানুষের জন্য এক নিরাপদ আশ্রয়স্থল এবং মানসিক
প্রশান্তির আঁধার, যা দুনিয়া এবং আখিরাতে বয়ে আনবে শান্তি এবং সম্মান ।
#শান্তি_ইসলামেই
#সমাজের_এবং_দেশের_শান্তির_জন্য_নামায_প্রতিষ্ঠা_করুন
No comments:
Post a Comment