Friday, September 23, 2022

শান্তি রক্ষায় পরিপূর্ণভাবে ইসলামে ফিরে আসুন, নামায প্রতিষ্ঠা করুন

 শান্তি রক্ষায় পরিপূর্ণভাবে ইসলামে ফিরে আসুন, নামায প্রতিষ্ঠা করুন

মোঃ আলগীর হোসেন


ইসলামের মূল স্তম্ভগুলোর মধ্যে নামাজ অন্যতম, যা প্রতিটি ঈমানদারের জন্য অবশ্যই পালনীয় । নামাজ মানুষকে দুনিয়ার সব পাপ-পংকিলতা থেকে ধুয়ে মুছে পাক-সাফ করে দিয়ে দুনিয়ার সব অন্যায়-অনাচার থেকে হেফাজত করার কথা ছিল । কিন্তু আজ দেশের চিত্র উল্টা, অপরাধ আর অপরাধীদের অবাধ বিচরণ ।  তার মানে আমরা নামাজ আদায় করছি না, করলেও সঠিক ভাবে হচ্ছে না । সুতরাং পরিবার থেকে সমাজ আর সমাজ থেকে দেশ প্রতিটি জাইগায়, প্রতিটি ক্ষেত্রে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য পরিপূর্ণ ভাবে আমাদের ইসলামে ফিরে আসতে হবে, প্রতিষ্ঠা করতে হবে নামাজ ।

শয়তানের ধোঁকায় যখন মানুষ অন্যায় ও অশোভনীয় কাজে লিপ্ত হতে চাইবে তখন সালাতই তার বিবেককে জাগ্রত করবে, তাকে বাঁধা দেবে । সালাত আদায় করে কেউ পবিত্র অফিসের, পবিত্র চেয়ারে বসে, পবিত্র টেবিলের উপরে, পবিত্র কলমের, পবিত্র কালি দিয়ে ক্ষণিকের মোহ সামলাতে না পেরে সবকিছুকে অপবিত্র করে সম্পদের পাহাড় গড়তে পারে না ।  আজ সমাজে যে মাদকাসক্তি, ঘুষ, দুর্নীতি, চুরি, তথ্য গোপন,  সন্ত্রাস, অপসংস্কৃতি, উগ্রতা, সুদ ও যৌনতার অবাধ বিচরণ তাতে নামায প্রতিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই । পবিত্র কোরআনে আল্লাহ্‌ নিজেই ঘোষণা করেছেন-

اتْلُ مَا أُوحِيَ إِلَيْكَ مِنَ الْكِتَابِ وَأَقِمِ الصَّلَاةَ إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاء وَالْمُنكَرِ وَلَذِكْرُ اللَّهِ أَكْبَرُ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مَا تَصْنَعُونَ

“আপনি আপনার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব পাঠ করুন এবং নামায কায়েম করুন । “নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও গর্হিত কার্য থেকে বিরত রাখে” । আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন তোমরা যা কর ” (সুরা আল-আনকাবূত: ৪৫) । সুমহান ওই প্রভুর সামনে যখন আপনি দণ্ডায়মান হবেন আপনাকে লজ্জিত ও অনুতপ্ত হতেই হবে । কেননা তিনিই তো অন্তর্যামী, যিনি প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য জানেন শুধু তাই না, জানেন অন্তরের সংকল্পও । একমাত্র সালাতই পারে ইখলাস, আত্মশুদ্ধি ও আত্মবিলোপের মহৎ গুণাবলির পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটিয়ে, সকল প্রকার অশ্লীলতা, পাপাচার, প্রবৃত্তিপূজা, ক্ষণস্থায়ী ভোগ বিলাসের অন্ধ মোহ থেকে মুক্ত করে পূতপবিত্র ও উন্নত এক আদর্শ জীবনের অধিকারী বানিয়ে মানুষকে পৌঁছে দিতে আল্লাহর সান্নিধ্যের স্বর্ণশিখরে । হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে অভিযোগ করল, অমুক ব্যক্তি রাতে সালাত আদায় করে আর দিনের বেলায় চুরি করে । নবীজী বললেন-তুমি যা বলছ (অর্থাৎ তার নামায) তা শীঘ্রই তাকে (এ অন্যায় থেকে) বিরত রাখবে  (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৯৭৭৮; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ২৫৬০) । পবিত্র কোরআনের আয়াত আর রাসূল(সাঃ) এর হাদিস অনুসারে সকল অসঙ্গতি দূর করার জন্য নামাজের প্রতিষ্ঠা করা একান্ত কাম্য । 

ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র এই পৃথিবীর প্রতিটি কাজের হিসাব বিচার দিবসে আপনাকে আমাকে দিতে হবে । আর সেখানে প্রথমেই দিতে হবে সালাতের হিসাব(মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৬৯৪৯; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৮৬৬) । পবিত্র কোরআনের মাধ্যমে ঘোষণা এসেছে, “সেদিন জাহান্নামীদের জাহান্নামে আসার কারন জিজ্ঞাসা করা হলে তারা প্রথমেই বলবে আমারা সালাত আদায়কারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না”(সূরা আল-মুদ্দাসসিরঃ ৪২-৪৩)  । সুতরাং নামায ছেড়ে দিয়ে জান্নাতি হওয়ার সপ্ন দেখা  যেমন মূর্খের স্বর্গে বসবাস, তেমনি বে-নামাজী জাহান্নামে যাবে এটাও সুনিশ্চিত ।  

সুতরাং বিবেককে বিসর্জন না দিয়ে ইসলামে ফিরে এসে, ইসলামের আলোয় আলোকিত হয়ে, ইসলামী বিধান অনুযায়ী পরিচালনা করুন আপনার জীবন । নিজে নামায পড়ুন, অন্যকেও পড়তে উৎসাহিত করুন । কেননা নামাযই মানুষের জন্য এক নিরাপদ আশ্রয়স্থল এবং মানসিক প্রশান্তির আঁধার, যা দুনিয়া এবং আখিরাতে বয়ে আনবে শান্তি এবং সম্মান ।

#শান্তি_ইসলামেই

#সমাজের_এবং_দেশের_শান্তির_জন্য_নামায_প্রতিষ্ঠা_করুন






লক্ষ্য যখন জান্নাত, সুখ পুরোটা জীবনই

 জান্নাতকে উদ্দেশ্য করেই করুন সব কাজ

মোঃ আলমগীর হোসেন


আমরা কেন ভালো থাকি! কেনইবা হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করি! একটু ভালোভাবে চিন্তা-ভাবনা করলেই দেখা যায় কোনকিছু পাওয়ার প্রবল ইচ্ছা, আশা বা সুনির্দিষ্ট কোন উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্যই আমরা বেঁচে থাকি বা ভালো থাকি যেমন চাকুরীজীবী মানুষেরা পরিশ্রম করে মাস শেষে বেতন অন্যান্য সুবিধা পাওয়ার জন্য, ছাত্র-পছাত্রীরা পড়াশোনা করে বছর শেষে ভালো ফলাফলের জন্য আবার কৃষক ফসল আবাদ করেন, পরিচর্যা যত্ন করেন মৌসুম শেষে সুন্দর ফসল ঘরে তোলার জন্য অনেকে দিনভর পরিশ্রম করেন নির্মল ঘুম অন্যের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য এভাবেই কিছু একটা হবে, কিছু একটা করব বা অন্যজনের মুখে হাসি ফুটানোর কারণ হবো, এই চিন্তা বা আশাতেই আমাদের এতো পরিশ্রম এই যে কিছু একটা পাবার যে উদ্দেশ্য এটাই আমাদের ব্যস্ত রাখে এবং কিছু একটা পাবো বলেই আমাদের মধ্যে সুখানুভুতির জন্ম হয় যেটা মূলত আমাদের বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা জোগায় এবং আরও ভালো থাকার সপ্ন দেখায় আবার কোন কিছু পাওয়ার উদ্দেশ্যে পরিশ্রম করে সেটা না পাওয়া গেলে আমরা হতাশ হয়ে পড়ি জীবনের অর্থ খুঁজতে থাকি যদিও আশেপাশে তাকালেই দেখা যায় জীবন অনেক অর্থবহ, জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত অনেক সুন্দর এখন আমরা যখন কোন উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আগাই সেখান থেকে সফলতা বা ব্যর্থতা আসতেই পারে যদিনা সেটাকে সফল করার জন্য আমরা পর্যাপ্ত পরিশ্রম না করি কেননা পৃথিবীতে আল্লাহ্ তায়ালা মানুষকে  যে সক্ষমতা প্রদান করেছেন তার মধ্যে ভালো-মন্দের ইচ্ছা শক্তি সেই ইচ্ছাকে সফল করতে পারার চেষ্টা অন্যতম তাহলে আমরা কোন কিছুতে সফল হবো কিনা তার অনেকাংশেই নির্ভর করে আমাদের ইচ্ছা শক্তি পরিশ্রমের উপর সুতরাং কোন কিছুতে ব্যর্থ হলে বা আমাদের মনগড়া সময় মতো কিছু না পেলে, হতাশ না হয়ে লক্ষ্যকে আরো বড় করে সামনে আগানোর চেষ্টা করতে হবে দেখবেন লক্ষ্যহীন মানুষেরা বেশি হতাশাগ্রস্থ হয়ে যায় যাদের অধিকাংশই জীবনকে অর্থহীন মনে করে পরিণতিতে আত্মহননের পথ বেছে নিতেও তারা দ্বিধা করে না

এখন প্রশ্ন আসতেই পারে তাহলে আমাদের জীবনের যে ব্যাপ্তি তার পুরোটা সময়কে কিভাবে সুখের মজ্জায় সাজাতে পারি! সেটা করতে হলে আমাদের জীবনের যে চূড়ান্ত লক্ষ্য সেটা নির্ধারণ করতে হবে সর্বশেষ এবং সর্বময় সুখের স্থান জান্নাতকে কারণ আমাদের এতো অস্থরতা, ছুটে চলে তার সবই বিন্দু পরিমাণ সূখের জন্য আর জান্নাত হলো চির-শান্তির স্থান যেখানে সবকিছুই সুন্দর আকর্ষণীয় বস্তু দ্বারা সু-সজ্জিত যখন আমাদের চিন্তা-ভাবনা, ধ্যানজ্ঞান, কাজকর্মসহ প্রতিটা পদক্ষেপ হবে চূড়ান্ত লক্ষ্য মানে জান্নাতকে সামনে রেখে তখন আমাদের মাঝে এক অদৃশ্য সুখানুভূতি কাজ করতে থাকবে আমাদের মাসব্যাপী, বছরব্যাপী কোন লক্ষ্য থাকতেই পারে তবে সব কাজের উর্ধ্বে আমাদের মনে যখন জান্নাত পাওয়ার আশা দোলা দিতে থাকবে তখন সুখানুভূতি হবে পরিতৃপ্ত এবং স্থায়ী আর অবস্থায় কারো দ্বারা হবে না মানবজাতির কোন ক্ষতি হবে না দুর্নীতি, কর্তব্যের প্রতি বিন্দু পরিমাণ অবহেলা কেননা তাহলে যে সর্ব সুখের বাসনা হাসিলের পথে প্রভাব পড়বে কারো মধ্যে হতাশা কাজ করবে না, কারণ সে তো আসল উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এগিয়ে যাচ্ছে একাধিক গবেষণা বলছে পৃথিবীর যত অপরাধ তার অধিকাংশই ঘটে চূড়ান্ত লক্ষ্যবিহীন হতাশাগ্রস্থ মানুষের দ্বারা সুতরাং পৃথিবীর জীবনে হতাশামুক্ত থেকে এহকালের মানসিক প্রশান্তি, অপরাধমুক্ত সমাজ পরকালের চির-স্থায়ী সূখের জন্য সকলেরই লক্ষ্য উদ্দেশ্য থাকা উচিত এবং সেটা জান্নাত

 

মোঃ আলমগীর হোসেন

সিনিয়র লেকচারার,

কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ

প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয় ।।